সাধারণত পহেলা বৈশাখ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক পর্যটন মৌসুম সচল থাকে। কিন্তু এ বছর ২ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে পবিত্র মাহে রমজান। একদিকে রমজান, অপরদিকে তীব্র তাপদাহে পর্যটক শূন্যতায় রয়েছে কক্সবাজার। তবে ঈদের ছুটিতে মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে বেড়াতে আসতে পারেন এমন আশায় প্রস্তুত কক্সবাজার।
শুক্রবার থেকে টানা ছয়দিন সরকারি বন্ধ। এরমধ্যে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২ অথবা ৩ মে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। রবিবার মে দিবসের বন্ধ। সব মিলিয়ে বুধবার পর্যন্ত সরকারি ছুটি। এরপর বৃহস্পতিবার একদিন খোলার পর আবার দুইদিনের সাপ্তাহিক ছুটি। সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা ৯ দিনের ছুটির ফাঁদে পড়েছে দেশ।
তবে, অন্য সময়ের মতো আগাম বুকিংয়ের তোড়জোড় নেই বলে জানিয়েছেন তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইসের বিপণন নির্বাহী ইমতিয়াজ সুমেল। তিনি বলেন, টানা ৯ দিনের ছুটি থাকলেও ৪ থেকে ৬ মে বুকিং হয়েছে। হোটেল-মোটেল জোনের প্রায় তারকা হোটেলে একই অবস্থা। অথচ অন্য সময়ে টানা তিন থেকে পাঁচদিন ছুটি থাকলেই বুকিংয়ের ফোন রিসিভ করতে করতে হাঁপিয়ে উঠতে হতো। এখন সেই ব্যস্ততা নেই।
একই কথা বললেন সি নাইট হোটেলের ব্যবস্থাপক শফিক ফরাজী। তিনি বলেন,অতিরিক্ত গরমের কারণে এই ছুটিতে তেমন চাপ নেই বললেই চলে। যা কল আসছে তা স্বাভাবিক। এরপরও ধারণা করা যায়, ৪ থেকে ৭ মে পর্যন্ত লাখো পর্যটক কক্সবাজার অবস্থান করবেন।
সেই আশায় পর্যটক বরণে তৈরি হচ্ছে পর্যটন নগরীর আবাসন ও খাবারের দোকানগুলো। চলছে হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলোতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। মাস দেড়েক ধরে সুনসান নীরবতায় থাকা সৈকত জুড়ে কোলাহল মুখর পরিবেশের আশায় রয়েছেন সবাই। ঢেউয়ের গর্জন ও বালিয়াড়ির বুকে ডালপালা ছড়ানো সাগরলতাও যেন পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে।
কক্সবাজার হোটেল মোটেল, গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, কক্সবাজারে ৫ শতাধিক হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস ও রিসোর্টে প্রায় দেড় লাখের মতো পর্যটক থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। ইতোমধ্যে ৫০-৬০ শতাংশ রুম বুকিং হয়েছে। সব মিলে কয়েক লাখ পর্যটক আসবে এমনটি ধরে নিয়ে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। আশা করছি- ঈদের আগে আগাম বুকিং আরও বাড়বে।
কলাতলীর স্বাধীন বাংলা রেস্তোরাঁর পরিচালক তাজুল ইসলাম বলেন, রমজানে কক্সবাজারে প্রায় পর্যটক শূন্য ছিল। এ সময় রেস্তোরাঁর কিছু ডেকোরেশন ও রংয়ের কাজ করা হয়েছে। অন্যরাও হোটেল, গেস্ট হাউস ও রিসোর্টগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্য বর্ধন কাজ চালাচ্ছে।
সৈকতের কিটকট (চেয়ার-ছাতা) ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, মার্চের শেষ সময় হতে কক্সবাজার পর্যটক শূন্য থাকায় গত মাস-দেড়েক কর্মচারীর বেতনও জোগাড় করতে পারিনি। ঈদের ছুটিতে পর্যটক বাড়লে ব্যবসা ভালো হবার আশা করছি।
কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম বলেন, পর্যটকের নিরাপত্তায় পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে সার্বক্ষণিক টহল রয়েছে। ঈদের ছুটিতে ব্যাপক পর্যটক সমাগম ঘটবে- সেটি বিবেচনায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছ। সৈকতে পর্যটকদের জন্য খাবার পানি এবং প্রাথমিক চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
MD NIROB HOSSAIN SANTHO